|| বঙ্গকথন প্রতিবেদন ||
সহকর্মীরাই হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখে বগুড়া বিসিক শিল্প নগরীর একটি ওয়ার্কশপের দুই নৈশ প্রহরীকে। এ ঘটনায় শনিবার তিন জনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিহতদের কর্মস্থল ‘মেসার্স মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ’র এক সাবেক ও দুইজন বর্তমান কর্মী তাদের হত্যা করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে মাছু মেটালের গাড়ি চালক মিল্লাত ওরফে নিনজা এবং তার সহকারী সুমন ব্যাপারী কৌশলে কারখানার বিভিন্ন মালামাল সরিয়ে বাইরে বিক্রি করতো।
শুক্রবার ভোররাতেও তারা একই কাজ করতে কারখানায় প্রবেশ করার সময় নৈশ প্রহরী শামছুল হক ও আব্দুল হান্নান তাদের বাধা দেয়। সে সময় মিল্লাত ও সুমনের সাথে রাহাত নামে ঐ কারখানার আরেক সাবেক শ্রমিকও ছিলেন। নৈশ প্রহরীরা তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলে এবং না গেলে মালিককে জানানোর হুমকি দিলে তারা তিনজন জোরপূর্বক হান্নান ও শামছুলকে ধরে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাদের।
পুলিশ সুপার আরো জানান, আগের দিন আসামি সুমন মিল্লাত ও রাহাতের কাছে দশ হাজার টাকা ধার চাইলে তারা তাকে কারখানায় চুরির কথা বলে ২ লাখ টাকা দেয়ার আশ্বাস দেয়। তাতে রাজি হওয়ার পর তারা তিনজন মিলে চুরির পরিকল্পনা করেন। কিন্তু নৈশ প্রহরীদের বাধায় সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। নৈশ প্রহরীরা চুরির বিষয়টি মালিককে জানানোর হুমকি দিলে, বিষয়টি ধরা পড়ে যাওয়ার আশংকায় নিনজা তার সহযোগীদেরসহ সুকৌশলে নাইট গার্ড হান্নান ও শামসুলকে হত্যা করে এই অপহরণের নাটক সাজায় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।
গত শুক্রবার বিকালে বিসিক শিল্পনগরীর ‘মেসার্স মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ’ এর সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতর থেকে শামছুল হক (৬০) ও আব্দুল হান্নান (৪৫) নামে নিহত দুই নৈশ প্রহরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত শামছুল হকের বাড়ি জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান প্রতাপপুর এলাকায়। তিনি ওই গ্রামের মৃত হাসু আলীর ছেলে। আব্দুল হান্নান বগুড়া সদর উপজেলার নামুজা বড়সরলপুর গ্রামের আব্দুল জোব্বারের ছেলে। পরে প্রতিষ্ঠানের মালিকের মোবাইলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পাঠানো হয় ক্ষুদেবার্তা। ঘটনার পর থেকে জেলা পুলিশ তদন্ত শুরু করলে শনিবার বিভিন্ন আলামতের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় হত্যাকারীদের। আটক ঐ প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালক হোসাইন বিন মিল্লাত ওরফে নিনজার বাড়ি শাজাহানপুর উপজেলায় তার বয়স ৩৪, চালকের সহকারী সুমন মন্ডলের বয়স ২৭, মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর সাবেক কর্মী রাহাত হাসানের এর বয়স ২১ তাদের বাড়ি সদরের নারুলী এলাকায়। এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণের কথা জানায় পুলিশ।
//আরজে