||বঙ্গকথন প্রতিবেদন||
‘আমার সামনে দুটো রাস্তা আছে, হয় মৃত্যুকে আহ্বান জানাতে হবে, না হলে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করতে হবে। আমি জানি, এটা অন্ধকারে গুলি চালানোর মতো। কিন্তু এছাড়া আমার কাছে অন্য কোনও উপায় নেই।’ অস্ত্রপচারের আগে ডেভিড এভাবেই ব্যক্ত করেন তার অনুভূতি।

গেল সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে ৫৭ বছর বয়সী ডেভিড বেনেটের দেহে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এই প্রথম শূকরের হৃৎপিণ্ডের জিনগত বৈশিষ্ট্য বদলে কোন মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হল। এ অস্ত্রোপচারের জন্য ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারকে বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা তদারকি কর্তৃপক্ষ।
তারপর থেকেই মানবদেহে শূকরের হৃৎপিণ্ড স্থাপন নৈতিকভাবে কতটা সমর্থনযোগ্য, সে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আবার অনেকেই প্রাণী অধিকারকে সামনে রেখে এর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন রাখতে শুরু করেছেন।
ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারের যে দলটি অস্ত্রোপচার করেছেন তারা অনেক বছর আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছিল। তারা মনে করেন, অস্ত্রোপচার সফল হলে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবন বদলে যাবে।
ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন :
ইসলাম ও ইহুদি ধর্মে শূকর পালন করা এবং খাওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তবে জীবন-মৃত্যুর প্রশ্নে শূকরের অঙ্গপ্রতঙ্গ ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেক ধর্মবিষয়ক বিশেষজ্ঞ। মিশরে ধর্মীয় বিধি আরোপের কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ দার আল-ইফতা এক ফতোয়ায় বলেছে, রোগীর জীবনের ঝুঁকি বা অতিরিক্ত স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা থাকলে শূকরের হৃৎপিণ্ডের ভাল্ব ব্যবহার অনুমোদন করা যেতে পারে।
তবে যেমনই হোক না কেন, বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবন বদলাতে এই অস্ত্রপচারের সফলতার দিকেই তাকিয়ে আছে সবাই।