||খেলার মাঠ প্রতিবেদন||
ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা নিউজিল্যান্ড- ক্রিকেটের এসব পরাশক্তির বিপক্ষে বহু আগেই সিরিজ জয় হয়ে গেছে বাংলাদেশের। কিন্তু উপমহাদেশের ক্রিকেট শক্তি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই অধরা সিরিজ জয়টাই কোনোভাবে আসছিল না। ঘরের মাঠে হোক কিংবা শ্রীলঙ্কা গিয়ে হোক, সম্ভাবনা জাগিয়েও সিরিজ জয় সম্ভব হচ্ছিল না টাইগারদের।
মঙ্গলবার রাতটা ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটে স্বপ্নের মতো। এমন মুহূর্ত সহসা ধরা দেয় না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ড গড়া জয়। এর আগে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতেনি টাইগাররা। সেই আক্ষেপ ঘুচলো মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে। ২৩ মাস পর ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচের নায়ক মুশফিক। তার হাত ধরেই আইসিসির সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে বাংলাদেশ দল।
এমন সব অর্জনের পর আর কীইবা চাওয়ার থাকে একজন ক্রিকেটারের? তবে নামটা যখন মুশফিকুর রহিম, এতেও তৃপ্ত থাকার কথা নয়। আরও রানের ক্ষুধা ছিল মুশফিকের। তার থেকে বড় আক্ষেপ ইনিংস শেষ করে আসতে না পারা। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন ইনিংসের ১১ বল বাকি থাকতে। ম্যাচ শেষেও সেই আক্ষেপেই পুড়লেন ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে শতক হাতছাড়া করেছেন মুশফিক। ৮৪ রানে আউট হন রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তুলনামূলক কম ঝুঁকি নিয়েছেন। এ ম্যাচে সেভাবে সুযোগ আসেনি বলে জানান মুশফিক, ‘রিভার্স সুইপ আমার অন্যতম প্রিয় শট। এরকম পরিস্থিতি আসেনি, আসলে অবশ্যই আবারও খেলবো। তৃতীয় ম্যাচে এমন পরিস্থিতি আসলে আমি একটা না, আরও চার-পাঁচটা খেলতে পারব।’
লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে তিন অঙ্কের কোটা ছুঁয়ে দীর্ঘ ২৩ মাস পর সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন মুশফিক। রঙিন পোশাকে এর আগে সবশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার দ্বিতীয় ওয়নাডে শতকটি এলো আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৫ ইনিংস পর। এটি একদিনের ক্রিকেটে মুশফিকের অষ্টম শতক।
এমন একটি ইনিংস খেলার পরেও তৃপ্ত নন মুশফিক। তার কথায়, ‘শতক তো একটা মাইলফলক বলতে পারেন, কিন্তু এটা একটা ব্যক্তিগত অর্জন। দিনশেষে দল জিতল কি না সেটা মূল ব্যাপার। শতক করেও নাও জিততে পারতাম। আমার মূল লক্ষ্য ছিল ৫০ ওভার যেন ব্যাট করতে পারি, যত রানই হোক ফাইট করতে পারি। ২৬০ রান ভালো সংগ্রহ ছিল। মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম।’
সেঞ্চুরিটা মুশফিককে তৃপ্তি দিচ্ছে দলের জয়ের কারণেই। জানালেন, সিরিজ জেতানো এ শতক ভবিষ্যতে ভালো করার অনুপ্রেরণাও, ‘এটা শুধুই আরেকটি সেঞ্চুরি। দল জিতলে প্রত্যেক সেঞ্চুরিই স্পেশাল। এটা আরও বেশি স্পেশাল কারণ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কখনোই সিরিজ জিততে পারিনি। সেঞ্চুরির জন্য সিরিজ জিততে পেরেছি। এটা সামনের দিনে আমাকে আরও ভালো করার প্রেরণা দিবে।’