রফতানি হচ্ছে না, দেশেও বেচাকেনা কম বিপাকে জালি টুপির কারিগররা

0 352

||উপজেলা প্রতিবেদক, ধুনট (বগুড়া)||

প্রতিবছর রমজানের বেশ আগে থেকে একেবারে পুরো রমজানজুড়ে ধুনটের জালি-টুপির কারিগরদের দিন কাটতো দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমাদৃত সূতার তৈরি টুপি পাঠানোর ব্যস্ততায়। দীর্ঘ কয়েক বছরের এমন চিত্রে গতবছর প্রথম ছেদ ঘটায় বৈশ্বিক মহামারি করোনা। সেটি কোনোমতে সামলে ওঠার চেষ্টায় তাদের অপেক্ষা ছিলো এবারের রমজানের। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আবারো বেশ স্থবির হয়ে পড়েছে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামীণ নারীদের হাতে তৈরি এই জালি-টুপি শিল্প।

এই উপজেলায় অন্তত পঞ্চাশ হাজার নারী টুপি বুননে জড়িয়ে আছেন। গ্রামের নারীদের হাতে তৈরি জালি টুপি দেশের বাজরে চাহিদা মিটিয়ে সৌদি আরব, দুবাই, কাতার, পাকিস্তান, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে সুনাম কুড়িয়ে আনছে গেলো কয়েক বছর ধরে। টুপি তৈরি করে অনেক নারী সংসারের হাল ধরেছেন, কেউবা আবার দরিদ্রতা ঘুচিয়েছেন। অন্য সময়ের চেয়ে রমজানে টুপির চাহিদা বেশি থাকে। এ কারণে শব-ই বরাতের পর থেকে পরবর্তী এক মাসে বেশি তৈরী হয় টুপি। এই সময়ে আয়ও বেড়ে যায় নারীদের। এবার করোনার প্রভাব টুপি শিল্পেও পড়েছে। টুপি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ফিকে হতে শুরু করেছে তাদের ঈদ আনন্দ।

টুপি তৈরিতে নিয়োজিত নারীরা জানান, পাইকারি ব্যবসায়ীরা টুপি না কেনায় ঈদের আগে তারা অন্তত ১০-১৫ হাজার টাকা আয় থেকে বঞ্চিত। এতে শুধু ঈদের কেনা-কাটা করা যেমন অসম্ভব হয়ে পড়েছে, তেমনি সংসারের খরচ বহন করাও কষ্টসাধ্য হবে। করোনায় বিপাকে পড়া এই নারীরা অবিলম্বে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

টুপির খুচরা ক্রেতারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বড় বড় শহরের সিংহভাগ মার্কেটগুলোতে আগের মত স্বাভাবিক কেনা-কাটা হচ্ছে না। লাখ লাখ টাকার টুপি পড়ে আছে মহাজনের গোডাউনে। অর্ডার থাকলেও করোনার কারণে সেগুলো দেশসহ বিদেশে পাঠানো যাচ্ছে না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা নারীদের উৎপাদিত টুপি কেনা বন্ধ রেখেছেন।

জালি টুপির পাইকারি ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, প্রতি বছর আমরা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আনি। এ বছর শিল্পের সঙ্গে জড়িত মালিক, ব্যাপারি, শ্রমিক সকলেই মানবেতন জীবন যাপন করছি। আমরা সরকার থেকে কোনো অনুদান বা সহযোগিতা পাইনি করোনার প্রথম বছরেও। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে করোনা দূর্যোগে সরকারকে পাশে দাঁড়াতে হবে, প্রণোদনা দিতে হবে; এমন মন্তব্য এই পাইকারের।

উপজেলা//এমএইচ

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More