বাজেটে বর্তমান অবস্থার মূল্যায়ন থাকা উচিত।দারিদ্র্য, শ্রমবাজার, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার—এসব বিষয়ে কোভিডের বাস্তবতা অস্বীকার করা হয়েছে এবারের বাজেটে।
শনিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান।
এবারের বাজেটে আগামী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। সেটা অর্জন করতে হলে যে পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন, কোভিডের বাস্তবতায় তা কীভাবে সম্ভব, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের হিসাবের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে প্রাক্কলন করা হয়েছে, তা অর্জন করতে হলে বেসরকারি
খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু বাজেটে তার রূপরেখা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে বাজেটে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির ফারাক আছে বলে মন্তব্য করেন সানেমের গবেষণা পরিচালক সায়েমা হক। কৃষি খাত বা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় কর ছাড় দেওয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা ইতিবাচক হলেও নিম্ন আয়ের মানুষ তার কতটা সুবিধা পাবেন, তা পরিষ্কার নয় বলে তিনি মনে করেন। ব্যবসাবান্ধব বাজেটের কথা বললেন অর্থমন্ত্রী, কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা সুবিধা পাবে, তাও স্পষ্ট নয়।
সায়েমা হকের মত, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি রোডম্যাপ থাকা উচিত।
তবে এই বরাদ্দ বৃদ্ধি উন্নয়নের অভিযাত্রার সঙ্গে কতটা সংগতিপূর্ণ, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। আর এবার বাজেটে যে বড় ধরনের সংস্কারের প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ হলো না বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন সায়েমা হক।
বাজেট বক্তৃতার পরিশিষ্টে ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপির অনুপাতে মোট বিনিয়োগের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ—সরকারি খাতে ৮ দশমিক ১ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ২৫ শতাংশ। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বিনিয়োগে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ কোভিডের আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিনিয়োগ হয়েছে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ, সাময়িক হিসাব অনুসারে। কোভিডের এই সময়ে বিনিয়োগের এই প্রবৃদ্ধি কীভাবে হবে, সেই প্রশ্ন তোলে সানেম।