আজ থেকে আট দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হচ্ছে। এতে দোকানপাট বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাজারের পণ্য উৎপাদকেরা বিপাকে পড়েছেন।
কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে সরকার কারখানা চালু রাখার সুযোগ দিলেও তা কাজে আসবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানান, যাঁরা পণ্য বিক্রি করবেন, তাঁদের দোকানপাট বন্ধ। তাই কারখানায় উৎপাদন করলেও তা বাজারে পৌঁছানো যাবে না, বিক্রিও হবে না। সে জন্য অনেকেই আগামী দু-এক দিন অপেক্ষা করে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা করছেন।
বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ক্রাউন সিমেন্ট গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাদের প্রধান কার্যালয় বন্ধ থাকবে, তবে কারখানা চালু থাকবে। কারখানা চালু থাকলেও সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিপর্যায়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হলে আমাদের পণ্য মজুত করতে হবে। মজুত রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ফুরিয়ে গেলে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হব। আগামী দু–তিন দিন পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হলে কারখানা বন্ধ করা হবে।’
বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা এ কে মাসাদুল হক বলেন, ‘সবকিছু বন্ধ থাকলে একদিকে রডের কাঁচামালের সংকট হবে, অন্যদিকে বাজারে চাহিদা কমে যাবে, বিক্রিও কমবে। খরচ কমাতে প্রথম কয়েক দিন কারখানা এক শিফটে চালাব, পরে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।’
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কারখানাগুলো দিনরাত চলে, কিন্তু করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়ায় হয়তো আগামী দু-তিন দিন কারখানা চালানো যাবে। এরপরে বিক্রি করব কোথায়? তখন বাধ্য হয়েই কারখানা বন্ধ করতে হবে।’ তিনি মনে করেন, দোকানপাট সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হলেও বস্ত্রকলের মালিকেরা পার পেয়ে যাবেন।
জাহিদ আকতার আরও বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে নতুন কোনো অর্ডার পাচ্ছি না। পুরোনো অর্ডারের আসবাবপত্র বানানো হচ্ছে। আগামী তিন-দিনের মধ্যে ওই সব আসবাবপত্র বানানো শেষ হবে। তখন কারখানা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আমার আর কোনো বিকল্প নেই।’
একইভাবে পুরান ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভৈরব, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাদুকাপল্লিগুলো সমস্যায় পড়েছে। তারা সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষের চপ্পল ও জুতা তৈরি করে। ছোট এই শিল্প খাতে লাখ লাখ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। এই খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের আগে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য তৈরি জুতার রমরমা ব্যবসা থাকে। লকডাউনের কারণে তা হচ্ছে না।