||বঙ্গকথন প্রতিবেদন||
উদ্দেশ্য ছিলো অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়। সেজন্য শিশু হানজালার মুখ বাঁধার সময় তার চিৎকার থামাতে গলা চেপে ধরে অপহরণকারী মঞ্জু মিয়া। আর তাতেই প্রাণ যায় ছয় বছর বয়সী ওই শিশুর। এরপরও ক্ষান্ত হয় নি মঞ্জু। হত্যার পর মরদেহ পুকুরে ফেলে কয়েকদফা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে সে। শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে নিজেই অপহৃত হানজালার পরিবারকে মোবাইলফোনে জানিয়ে দেয়, কোথায় রাখা আছে তার মরদেহ। বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় তিন মাসে আগের এই হত্যাকাণ্ডের একমাত্র আসামী মঞ্জু মিয়াকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

শুক্রবার রাতে কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বরে গাবতলীর রামেশ্বরপুর নিশুপাড়া এলাকায় বাড়ির সামনে প্রতিবেশী মঞ্জু মিয়ার ওষুধের দোকানে যায় শিশু হানজালা। এসময় শিশুটিকে মোবাইলফোনে গেম খেলতে দিয়ে দোকানের সাটার নামিয়ে দেয় মঞ্জু। অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে তার মুখ ও হাত-পা বাঁধাতে শুরু করলে হানজালা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। চিৎকার থামাতে মঞ্জু তার গলা চেপে ধরে রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় শিশুটির। দিনভর মরদেহটি দোকানে রাখার পর গভীর রাতে বস্তায় মুড়িয়ে সেটি এলাকার একটি পুকুরে ফেলে দেয় মঞ্জু।
পুলিশ সুপার জানান, হানজালার কোনো সন্ধান না পেয়ে পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার বাবা। ঘটনার পর সপ্তাহখানেক ধরে মঞ্জু মোবাইলফোনে গলার স্বর পরিবর্তন করে হানজালার পরিবারের কাছে কয়েকদফা ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাতে ব্যর্থ হয়ে ২১ ডিসেম্বর নিজেই ফোন করে জানিয়ে দেয় বাড়ির পাশের পুকুরেই রাখা আছে হানজালার মরদেহ।
হত্যাকাণ্ডের তিন মাস পর গোয়েন্দা পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে সক্ষম হয়। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য মঞ্জুর কেনা সিমকার্ডের সূত্র ধরেই তাকে শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর শুক্রবার তাকে গ্রেফতারের পর সে নিজেই ঘটনার বিবরণ দিয়েছে পুলিশের কাছে।
এমএইচ//