।। বঙ্গকথন প্রতিবেদন ।।
কখনও কি ভেবেছেন, পেটের ভেতরটা শূন্য, কিছুই নেই সেখানে ! এমন ভয়ংকর চিন্তা কল্পনাতেও আনার সাহস পান না অনেকেই । তবে অবাক করা বিষয়, ৩৬ বছর বয়সী জুয়ান ডুয়ালের পেটের ভেতরটি একদম ফাকা । তার পেটের মাঝে নেই পাকস্থলী, মলাশয়, রেকটাম ও পিত্তথলী । তা সত্ত্বেও জনপ্রিয় ম্যারাথন দৌড়বিদ জুয়ান প্রায় ১৮ বছর ধরে এভাবেই বেঁচে আছেন । স্পেনে জন্ম নেয়া জুয়ান মাত্র ১৩ বছর বয়সে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। জানতে পারেন ফ্যামিলিয়াল মাল্টিপল পলিপোসিস নামের এই জিনগত রোগটি পাকস্থলীর ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এরপর ১৯ বছর বয়সে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে জুয়ানের কোলন এবং মলদ্বার কেটে ফেলার পর শুরু হয় তার বেঁচে থাকার লড়াই। ২৮ বছর বয়সে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পরেন । চিকিৎসকের পরামর্শে এবার পাকস্থলী কাটা পরে তার। পাকস্থলী অপসারণের পর তার ওজন কমে হয় ১০৬ কেজি থেকে মাত্র ৫৭ কেজি । তবে এখানেই শেষ নয়, কিছুদিন পর আবারো জুয়ানকে যেতে হয় ছুরি-কাচির নিচে। এবার পিত্তথলি, সেখানে বাসা বেঁধেছিল বিপজ্জনক এক ব্যাকটেরিয়া ।এমন পরিস্থিতিতে জুয়ান জাপানে গিয়ে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করেন। তবে জাপানি ভাষা বলতে না পারায় বেশিরভাগ সময় তিনি হাঁটতেন। সাথে থাকতো একটি কুকুর। এমনই একদিন কুকুরটি দৌড়াতে শুরু করে । তাড়া করতে গিয়ে জুয়ান অনুভব করেন তিনি দৌড়াতে পারছেন। এর কিছু দিন পর জুয়ান ইংল্যান্ডের পাহাড়ে ঘেরা এক ছোট শহরে কাজ নেন। সেখানে বেশ ক’জন বন্ধুও পেয়ে যান। তাদের উৎসাহে জুয়ান নতুন উদ্যোমে শুরু করেন
শারীরিক অনুশীলন । অবাক করা বিষয়, শেষ অপারেশনের ৮ মাস পরই টানা দু’ঘণ্টা বার্সেলোনা হাফ ম্যারাথন শেষ করেন জুয়ান । এরপর তিনি পর্বত দৌড় এবং দীর্ঘ ম্যারাথনের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। তিনি জানান, ‘খেলাধুলা তাকে সুস্থ রেখেছে এবং বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগায়’। পাকস্থলী না থাকায় জুয়ানের ক্ষুধার অনুভূতি হয় না । শারিরীক সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পুষ্টিবিদের পরামর্শে জুয়ান রুটিন করে তরল খাবার বেশি খান । তবে শুধু তরল নয় ডোনাট, হ্যাম, পাস্তাসহ সবকিছুই খেয়ে থাকেন জুয়ান। যদিও তার শরীর কিভাবে খাদ্য গ্রহণ এবং হজম করে তা সম্পূর্ণ অজানা। এভাবেই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো ছাড়াই আজো দিব্বি বেঁচে আছেন জুয়ান ডুয়াল।
এবি/আরজে