||বিদেশ-বিভূঁই প্রতিবেদন||
দেশটিকে একটি ‘কল্যাণমূলক রাষ্ট্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে চান তরুণ বামপন্থী নেতা প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক। চিলির নবনির্বাচিত এই প্রেসিডেন্ট সমালোচকদের কাছ থেকে পেয়েছেন ‘কমিউনিস্ট’ তকমা।
১৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বোরিক ১০ লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু কাস্ত ৮৩ লাখ ভোটের মধ্যে ৩৬ লাখ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কট্টর ডানপন্থী রক্ষণশীল নেতা জোসে অ্যান্তোনিও কাস্ত। নয়া উদারবাদী অর্থনীতির সমর্থক এই নেতা বোরিককে কমিউনিস্ট হিসেবে অভিযোগ তোলেন।
বোরিকের জোটের নাম অ্যাপ্রুভ ডিগনিটি। তাঁর মতাদর্শ অনেকটাই মধ্যপন্থী। এই জোটে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে কমিউনিস্ট পার্টির ডেনিয়েল জাদুকে পরাজিত করেছিলেন তিনি। স্পিনোজা বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে বোরিক ভুয়া সংবাদভিত্তিক প্রোপাগান্ডার শিকার হন।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, সবুজ উন্নয়নের দিকে দেশকে নিয়ে যেতে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা ৪৫ থেকে কমিয়ে ৪০ ঘণ্টা করবেন। ৫ লাখ নারীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন। তিনি চিলির অবসর ভাতার ব্যবস্থাও বদলাতে চান।
নির্বাচনে জয়ের পর, সামাজিক অধিকার বাড়ানোর ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেন বোরিক। তবে সেটা তিনি করতে চান রাজস্ব আয় ও সরকারের ব্যয়ের মধ্যে সমন্বয় করেই। তিনি বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনীতিকে রক্ষা করেই আমরা এটা করব।’
চিলির অর্থনীতিবিদ ফ্রান্সেসকো কাস্তানেদা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বোরিক কমিউনিস্ট নন। তাঁর রাজনৈতিক জোটকে এটা শিখতে হবে যে রাজস্ব আয় ও সরকারের ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য অনুসারে, চিলির সবচেয়ে ওপরের দিককার ১ শতাংশ মানুষ দেশটির ২৫ শতাংশের বেশি সম্পদের মালিক।
চিলিকে বদলানোর ব্যাখ্যা দিয়ে বোরিক বলেছেন, ‘আমরা একটা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গড়তে চাই, যাতে কারো কাছে কত টাকা থাকবে, সেটার অধিকার সবার জন্য সমান থাকে।’
কমিউনিস্টদের নীতি নিয়ে গভীর ভীতি আছে। ভেনেজুয়েলার অনেক নাগরিক এখন চিলিতে অভিবাসী হয়ে এসেছেন এবং দেশটির খারাপ পরিস্থিতির জন্য কমিউনিস্ট নীতি দায়ী বলে মনে করেন চিলির অনেকে।
চিলির এই তরুণ প্রেসিডেন্ট যদি সেখানকার নয়া উদারবাদী অর্থনৈতিক মডেলে মৌলিক কোনো বদল আনতে চান, তবে সেটা তাঁর জন্য খুব কঠিনই হবে। কেননা, আইনসভায় বাম ও ডানপন্থীদের সংখ্যা সমান।
বোরিককে তাঁর কর্মসূচি পাস করাতে হলে নিজের জোটের বাইরেও মধ্য-বামদের প্রতিটি ভোট প্রয়োজন। এর মানে, কাউকে বাদ দেয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। সবকিছু মিলিয়ে অগ্নিপরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি।
এসএ//এফএস