আজ বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি ডটকম লিমিটেডের সার্বিক বিষয় নতুন করে খতিয়ে দেখবার জন্য বহুপক্ষীয় বৈঠক ডেকেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের পর্যবেক্ষণ দিয়ে গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনটি পাঠায়। প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণগুলো পর্যালোচনা করে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিবেদনটি তৈরি করে।
জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ গতকাল বুধবার বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) বিকেলে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনটির নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর কিছু সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা আজকের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
ই-ভ্যালি লোকসানে পণ্য বিক্রি করছে।যে কারণে ই-কমার্স ব্যবসায় অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।অগ্রিম পণ্যমূল্য নিয়ে ও উচ্চ হারে ছাড় দিয়ে ই-ভ্যালির গ্রাহকদের অর্থকে ঝুঁকিতে ফেলেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলের মনে হয়েছে।কোম্পানিটি চলতি দায় ও লোকসানের দুষ্ট চক্রে বাধা পড়েছে। ক্রমাগতভাবে এমন দায় তৈরি হয়েছে যে প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব টিকে না থাকার ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রয়াদেশের ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্রাহককে তার পরিশোধিত মূল্যের পরিবর্তে পণ্যটির বাজারমূল্য ফেরত দিচ্ছে। তাই বিপুলসংখ্যক গ্রাহক অনেক বেশি অর্থ ফেরত পাওয়ার আশায় ই-ভ্যালির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, অস্বাভাবিক ব্যয়ের বিষয়ে সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। ই-ভ্যালির আর্থিক ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য দিতে বললেও বারবার সময় চায় ই-ভ্যালি কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শকেরা দেখতে পেয়েছেন, অতীতের একটি নির্দিষ্ট তারিখের তথ্য নেই কোম্পানিতে। এর গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যাও দিতে পারেনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাইলে গতকাল মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘এটা একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরিদর্শন। বাস্তবে লোকসানকে এই সময়ে আমরা বিনিয়োগ হিসেবে মেনে নিচ্ছি এবং মুনাফার দিকে যাচ্ছি।’
অর্থ ফেরতের দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পর্কে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘বাস্তব কারণও আছে। অনেকে বোনাস নেয়। অনেকে আংশিক ব্যয় করে ফেলে। আর তথ্য প্রদানের সময় দেওয়া হয়েছে অল্প। তারপরও যত বেশি তথ্য দেওয়া সম্ভব, দেওয়া হয়েছে। স্বীকার করছি, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক তথ্য এখনো গোছানো হয়নি।’