||যাপিত জীবন প্রতিবেদন||
মানবদেহের জন্য শশার কাজের ক্ষেত্র বেশ বিস্তৃত। শশা-য় যা যা করা যায়, তার ফর্দ বেশ লম্বা। সেই ফর্দের খানিকটা আজ বঙ্গকথনের পাঠকদের জন্য-
১. তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শসা খুব ভালো টোনার হিসেবে কাজ করে। এটি ত্বকের ওপেন পোর নিয়ন্ত্রণ করতে বেশি উপকারী। মুখ ধোয়ার পর শুধু শসার রস টোনার হিসেবে মুখে লাগাতে পারেন। একে আরো কার্যকারী করতে আপেল, সাইডার ভিনেগার, টমেটোর রস এবং এলভেরা জেল মিশিয়ে নিতে পারেন।
২. শসাতে থাকা ব্লিচিং প্রপার্টিজ ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল ও চামড়ার ভাঁজ সমান করে। সান বান (রোদ্রে পোড়া) দূর করতে বাইরে থেকে এসে প্রতিদিন শসার রস মুখ ধোয়ার পর লাগাতে পারেন।
৩. মুখের ব্রনের সমস্যা দূর করতে চাইলে ২ চা চামচ শসার রসের সাথে গোলাপ জল এবং মুলতানি মাটি মিশিয়ে প্যাক তৈরী করুন। এটি মুখে ভালো মতে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন নিয়মিত ব্যবহার করুন। ব্রন কমে যাবে।
৪. শসা খাওয়ার ফলে শরীরের ত্বক হাইড্রেটেড এবং ময়েশ্চারাইজড থাকে। এর কারণ হচ্ছে শসার ৯৫% উপাদানই হচ্ছে পানি। শসার বিচিতে রয়েছে ভিটামিন-ই এবং পটাশিয়াম, যা ফাইন লাইন্স, রিংকেলসহ বার্ধক্যের বিভিন্ন ছাপ দূর করে ত্বক উজ্জ্বল এবং যৌবনদ্বীপ্ত রাখে।

৫. বয়সের ছাপ লুকাতে ২ টেবিল চামচ টক দই, আধা চামচ মধু এবং ১ চামচ লেবুর রসের সাথে ২ চামচ গ্রেট করা শসা এবং ২টি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভালো মতো মেশান। এবার এটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ফাইন লাইন্স ও রিংকেল দূর করে ত্বক টানটান এবং সুন্দর করে।
৬. অনেকের মুখের ত্বক তৈলাক্ত। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ, লেবুর রস, এবং শসা পেস্ট একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরী করুন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। শুকিয়ে গেলে মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি চামড়ার অতিরিক্ত তেলভাব নিয়ন্ত্রণ করে।
৭. যদি মুখের ত্বক শুস্ক হয় হবে ১ চা চামচ ওটমিল এবং পরিমাণ মত শসা পেস্ট তৈরী করে একসাথে মিশিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। মুখে এবং ঘাড়ে মিশ্রণটি ভালো মতো মেখে ২০ মিনিট রাখুন। ত্বক ময়েশ্চায়ইজড রাখার জন্য মিশ্রণটির সাথে ১ চা চামচ মধুও মিশাতে পারেন।
৮. ডার্ক সার্কেল (কালশিটে) কমাতে শসা বেশ কার্যকর। শসাতে থাকা এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং সিলিকা চোখের কালশিটে কমিয়ে চোখের চারপাশের স্কিন ভালো রাখে। শসা স্লাইস করে কেটে অথবা তুলার মধ্যে শসার স্লাইসটি লগিয়ে সেই তুলা কিংবা শসার স্লাইসটি চোখের উপর ২০ মিনিট রাখুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করতে থাকুন। নিয়মিত ব্যবহারে চোখের নীচের কালশিট কমবে। এ ছাড়াও শসাতে থাকা এসকরবিক এসিড এবং ক্যাফেইক এসিড চোখের ফোলাভাব দূর করতে বেশি কার্যকরী।
৯. আমাদের অনেকের নখ কোমল এবং ভঙ্গুর। তাই নিয়মিত শসা খেলে এর মাঝে থাকা প্রচুর পরিমাণে সিলিকা যা নখ শক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এতে নখের ভাঙ্গা কমে গিয়ে নখ শক্ত হয়।

১০. ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে একটি শসা ব্লেন্ডারে ভালো মতে ব্লেন্ড করুন। ব্লেন্ড করা পেস্টে ২ চামচ লেবুর রস এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে মুখ ও ঘাড়ে লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ত্বকের রুক্ষ ভাব দূর করে চেহারা উজ্জ্বল করে।
১১. শসায় বিদ্যমান সালফার, সিডিয়াম, সিলিকন, ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম চুলের বৃদ্ধিতে অতুলনীয় ভূমিকা রাখে। এ ছাড়াও এটি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। শসা ও টমেটো ব্লেন্ডারে মিক্স করে জুস বানিয়ে খেতে পারেন।
১২. একটি শসার খোসা ছাড়িয়ে ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিন। এবার একটি ডিমের মধ্যে তিন চা চামচ অলিভ অয়েল প্রথমে ভালো মতো মিশিয়ে এরপর এর সাথে শসার খোসার পেস্ট মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। এরপর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি চুলের গোড়া মজবুত করে চুল স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করে তোলে।
ডিবি/এমএইচ/২১.০৯.২০২০/