||উপজেলা প্রতিবেদক, ধুনট (বগুড়া)||
গ্রামীণ জনপদের সেতু। দুই পাশে পাকা সংযোগ সড়ক। বদলেছে গ্রামীণ মেঠোপথ। উন্নত হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার। কিন্ত সেই সড়কগুলো-ই এখন মরণফাঁদ। কোনোটির এক পাশে, আবার কোনোটির দুই পাশেই ধ্বসে পড়েছে সেতুর সংযোগ সড়ক। ফলে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে সেতু। দূর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে যাতায়াত করছে নানা ধরনের যানবাহণ ও পথচারীরা। এমন চিত্র বগুড়ার ধুনট উপজেলার গ্রামীণ জনপদের ৯টি সেতুর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের সাথে ১০ ইউনিয়নে যোগাযোগের সবগুলো রাস্তা পাকা করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। একই সাথে রাস্তাগুলোতে থাকা নদী, নালা ও খালে ছোট-বড় সেতু নির্মিত হয়েছে। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে ঠিকই, কিন্ত এ সব সেতুর মধ্যে ৯টি সেতু বর্তমানে ভাঙার ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু গুলোর মধ্যে বিলচাপড়ি, এলাঙ্গী, বরইতলী, শাকদহ, সোনারগাঁ, বানিয়াগাতি, গোসাইবাড়ি, সাতটিকরি, রুদ্রবাড়িয়া। এ সবের মাঝে বিলচাপড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সেতুটি ভয়াবহ ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর সংযোগ সড়কের দুই পাশে রাস্তা ধসে গেছে। এছাড়া কোথাও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও আবার সড়ক ভেঙ্গে পড়েছে। সব মিলিয়ে সেতুগুলোর উপর দিয়ে চলাচল নিরাপদ নয়। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। স্থানীয়রা দূর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে সতর্ক সংকেত হিসেবে সংযোগ সড়কের ভাঙা স্থানে স্বেচ্ছায় লাল নিশান উড়িয়ে দিয়েছেন।
এভাবে সেতু ক্ষতির কারণ অনুসন্ধানে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানান, সেতুগুলো নির্মাণকালে নিম্নমানের কাজ করা হয়েছে। সেতুর দুই পাশে যে পরিমাণ মজবুত করে মাটি ভরাটের কথা ছিল তা করা হয় নি। এতে সেতুর দুই পাশে মাটি দেবে গিয়ে পাকা সড়ক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে ধ্বসে গেছে সেতুর অনেক অংশ। সেতুর ওপরের পানি প্রবাহের জন্য ব্যবস্থা না থাকায় এ ধরণের ক্ষতি হয়েছে। এসব সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। সেতুগুলো ঝুঁকিপূর্ন হওয়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্নও ঘটছে। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এমন সেতুর ওপর দিয়েই যানবাহন চলাচল করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ধুনট উপজেলা প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, অতিবর্ষণে সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ সেতুগুলোর তথ্যচিত্র সংগ্রহ করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভাতেও আলোচনা করা হয়েছে।