||উপজেলা প্রতিবেদক, ধুনট (বগুড়া)||
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ফসলের খোলা মাঠ ও যমুনার দুর্গম চরের আস্তানায় নিরাপদে তিন তাসের জুয়া খেলার আসর বসছে নিয়মিত-ই। এখানে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়াড়িরা এসব আস্তানায় জড়ো হয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে জুয়া চলে।
এসব জুয়ারিরা যেকোনোভাবে টাকা যোগাড় করে জুয়ার আসরে ঢালছে। আর সেই অর্থ যোগাড় করতে গিয়ে তারা নানা অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে। মাঝে মাঝে দুয়েকটি পুলিশি অভিযানে জুয়াড়ি আটক করা হলেও নেপথ্যের আয়োজকরা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
উপজেলার নসরতপুর গ্রামের কৃষক আজিবর রহমান, আব্দুস সাত্তার ও নায়েব আলীসহ স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় তাদের গ্রামের নাদু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে খোলা জমিতে জুয়ার আসর পরিচালনা করে আসছেন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে জুয়া খেলতে আসেন। সেখানে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়ার চলে। প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিতে বিশ্বহরিগাছা বাজার, নসরতপুর পাকা রাস্তা, ফড়িংহাটা ও সাতপাকিয়া এলাকায় পাহারা বসানো হয়। আয়োজকরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করার সাহস করেন না। সম্প্রতি গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে গেলে জুয়ার সরঞ্জাম ফেলে পালিয়ে যায় জুয়াড়িরা।
উপজেলার বানিয়াজান গ্রামের বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জুয়া খেলায় তিনি এখন নিঃস্ব। এই এলাকায় তার মতো অনেকেই সুদে টাকা এনে জুয়া খেলায় মত্ত ছিল। সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। তা ছাড়া সর্বস্ব খুইয়ে দিশেহারা হয়ে কেউ কেউ নেশার জগতেও ঝুঁকে পড়ছেন।
উপজেলার মানিকপোটল গ্রামের এক জুয়াড়ি জানান, পৈতৃকসূত্রে তার ৫ বিঘা জমি ছিল। সব জুয়া খেলে খুঁইয়েছে। এখন বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। পঅনেক জুয়ারি কোনোদিন সব টাকা হেরে বাড়িতে যান, আবার কখনো কখনো জেতেনও। বেশির ভাগ দিন জুয়ায় হারলেও নেশার টানে সেখান বেরুতে পারেন না অনেকেই।
এ বিষয়ে ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, এ উপজেলায় জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে কয়েকটি মামলাও হয়েছে। তবে নসরতপুর ও চর এলাকায় জুয়ার আসরের বিষয়ে কেউ অবগত করে নি। কার নেতৃত্বে সেখানে জুয়া চলছে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা//এমএইচ//