।।খেলার মাঠ প্রতিবেদন।।
দুই বছর আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন সাদ উদ্দিন। নিজের শহর সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় দুর্ঘটনার পর সাদের জীবন থেকে লাল-সবুজ জার্সিটা হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা জেগেছিল। কিন্তু অদম্য স্পৃহা আর কঠোর পরিশ্রম সাদকে আবারও মাঠের খেলায় ফিরিয়ে এনেছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করেই তিনি জানান দেন দলের জন্য কিছু করতে চান। আর এবার নেপালের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথমটিতে নাবীব নেওয়াজ জীবনের গোলটি বানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ডান প্রান্ত দিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে বডি ডজ দিয়ে বক্সে ফেলা পাস থেকে জীবন গোল করে সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। তবে এবার সাদ চাইছেন গোল করতে। রবিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলনের ফাঁকে এই ফরোয়ার্ড নিজের প্রত্যাশার কথা শুনিয়েছেন, ‘অনেকদিন ধরে গোল করতে পারিনি। অ্যাসিস্ট করেছি ভালো লাগছে, কিন্তু চেষ্টা করবো পরের ম্যাচে গোল করতে। চেষ্টা করছি ম্যাচ বাই ম্যাচ উন্নতি করতে। তবে গোল করাটাই মূল বিষয় না, যদি দলকে জিততে সাহায্য করাটাই আসল।’
অনেকদিন পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আবাহনী লিমিটেডের এই ফরোয়ার্ড বেশ খুশি,‘আসলে অনেকদিন পর আমরা মাঠে ফিরে জয় পেয়েছি। সবাই খুশি। আমাদের সবার মন ভালো। পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। আগের ম্যাচে আমাদের অনেক ভুল ছিল। সেগুলো কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। আরও উন্নতি করা উচিত আমাদের (কাতার ম্যাচ সামনে রেখে)। আগের ম্যাচে আমাদের অনেক দিকে ঘাটতি ছিল, অনেক দিকে উন্নতিও ছিল। সব মিলিয়ে খারাপ না, ভালো শুরু হয়েছে।’
সাদ একজন বৈচিত্র্যময় ফুটবলার। দলের প্রয়োজনে যেকোনও জায়গায় খেলতে পারেন। রাইট উইংয়ে খেললেও প্রয়োজনে নিচে নেমে মিডফিল্ড কিংবা ডিফেন্সও সতীর্থদের সহায়তা করতে জানেন। যেটা আবাহনীর হয়ে খেলায় বেশি দেখা যায়। দলের ফিটনেস নিয়ে সাদ বলেছেন,‘প্রথমার্ধে সবাই ভালো খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে কেউ দাঁড়িয়ে থাকেনি, কিন্তু চেষ্টা করছে সবাই ভালো করার। অনেকদিন পরে খেলার কারণে কিছু খেলোয়াড়ের সমস্যা হয়েছে। অনেকে আবার ভালোও করেছে। পরের ম্যাচে আশা করি এই সমস্যা হবে না। আরও দুই-চারটা ম্যাচ খেললে আমাদের ফিটনেস ফিরে আসবে।’ পরের ম্যাচ কতটা কঠিন, এমন প্রশ্নের উত্তরে সাদ বলেছেন, ‘নেপাল-বাংলাদেশ ম্যাচ সবসময় ফিফটি-ফিফটি ম্যাচ। ওদের ফিটনেস এত খারাপ না। আগের ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ওরা ভালো করেছে। আমরা ডাউন ছিলাম। পরের ম্যাচ আরও কঠিন হবে। কেননা আমরাও একটা ম্যাচ খেলেছি, ওরাও একটা ম্যাচ খেলে প্রস্তুত হয়েছে। পরের ম্যাচটা আরও ইন্টারেস্টিং হবে মনে হচ্ছে।’ প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের মাঝমাঠ কিছুটা নিষ্প্রভ ছিল। এ নিয়ে সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস কাজও করছেন।
সাদের মতে, ‘এটা নিয়ে কোচ আজ আমাদের অনুশীলন করিয়েছে। পাসিং প্র্যাকটিস করেছে। মাঝে আমাদের এই অনুশীলনটা যথাযথ হচ্ছিল না। কোচ বলে দিয়েছেন আমাদের এটা কীভাবে করতে হবে। আশা করি আস্তে আস্তে….। গত আট মাস খেলা না থাকা একটা কারণ। অনেকদিন পর একসাথে খেলার কারণে বোঝাপড়া একটু কম ছিল।’