||খেলার মাঠ প্রতিবেদন||
বিশ্বের সবচেয়ে খরুচে ও জাঁকজমকপূর্ণ ঘরোয়া ক্রিকেট লীগ বললে এক কথায় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ বা আইপিএলের নাম চলে আসবে। রবিবার আইপিএলের ১৩তম আসরের ৩০তম দিনে একরকম সুপার ওভারের মেলা বসে গিয়েছিলো।
রবিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪ টায় ও রাত ৮ টায় দুইটি ম্যাচ ছিল। প্রথম ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মুখোমুখি হয় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে কেকেআরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৬৩ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯ ওভার শেষে এসআরএইচ সংগ্রহ করে ৬ উইকেটে ১৪৭ রান, শেষ ওভারে দরকার পড়ে ১৭ রানের। বল করতে আসেন ইঞ্জুরড আন্দ্রে রাসেল। ক্রিজে তখন এই ম্যাচেই আইপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম ৫০০০ রানের মাইলফলকে পা দেওয়া ডেভিড ওয়ার্নার। ৬ বলে ১৬ রান নিয়ে ম্যাচ চলে যায় সুপার ওভারে।
হায়দ্রাবাদের ইনিংসে দুর্দান্ত বোলিং করা কিউই পেসার লকি ফারগুসন আসেন সুপার ওভারে বল করতে। প্রথম বলে ওয়ার্নারকে বোল্ড করে পরের বলে ২ রান দেন, তিন নাম্বার বলে আব্দুল সামাদের উইকেট নিয়ে কলকাতার জন্য ৩ রানের সহজ টার্গেট সেট করে দেন যা কেকেআরের বর্তমান ও সাবেক ক্যাপ্টেন মিলে সহজেই করে ফেলেন। কলকাতা নাইট রাইডার্স সুপার ওভারে ম্যাচ জিতে যায়।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রাত ৮ টায় মাঠে নামে সবচেয়ে বেশিবার শিরোপা জেতা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং এবারের পয়েন্ট টেবিলের তলানীতে থাকা কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।শুরুতে উইকেট হারলেও প্রথম ইনিংস শেষে মুম্বাইয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৭৬ রান, জবাবে পাঞ্জাবও ২০ ওভার খেলে সংগ্রহ করে ৬ উইকেটে ১৭৬ রান। ফলে একই দিনে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে আবার যেতে হয় সুপার ওভারে। পাঞ্জাবের হয়ে ব্যাটিংয়ে আসেন ক্যাপ্টেন লোকেশ রাহুল এবং ক্যারিবিয়ান নিকোলাস পুরান। কিন্তু জাস্প্রিত বুম্রাহর দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয়ের জন্য মাত্র ৬ রানের টার্গেট পায় মুম্বাই। কিন্তু নাটকীয়তার তখন ও বেশ খানিকটা বাঁকি। মোহাম্মাদ শামির দারুণ বোলিংয়ে মুম্বাইয়ের দুই ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা এবং কুইণ্টন ডি কক ৬ বলে ৫ রানই নিতে পারেন, শেষ বলে ২ রানের প্রয়োজন থাকলেও আসে ১ রান। সুপার ওভার টাই হওয়ার ফলে ম্যাচ চলে যায় ওয়ান ওভার এলিমিনেটরে।
উল্লেখ্য, গত বছর ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল ও সুপার ওভার টাই হওয়ায় মুল ম্যাচে বেশি সংখ্যক বাউন্ডারির উপর ভিত্তি করে জয়ী ঘোষনার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বিবেচনা করে নতুন এই নিয়ম চালু করা হয়। তবে নিয়মানুযায়ী প্রথম সুপার ওভারে বোলিং ও ব্যাটিং করা কোন খেলোয়াড় এই ওয়ান ওভার এলিমিনেটরে বোলিং ও ব্যাটিং করতে পারবে না। সেজন্য রোহিত শর্মা, কুইণ্টন ডি কক, জাস্প্রিত বুম্রাহ এবং লোকেশ রাহুল, নিকোলাস পুরান, দীপক হুদা ও মোহাম্মাদ শামি বোলিং বা ব্যাটিং করআর সুযোগ পান নি।
এবার পাঞ্জাবের হয়ে বোলিংয়ে আসেন ক্রিস জর্ডান, মুম্বাইয়ের কাইরন পোলার্ড ও হার্দিক পান্ডিয়ার বিপক্ষে বল করে ১১ রান দেন। ফলে পাঞ্জাবের সামনে দাঁড়ায় ১২ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট। পাঞ্জাবের হয়ে ব্যাটিংয়ে আসেন ইউনিভারর্স বস ক্রিস গেইল এবং এবারের আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মায়াঙ্ক আগারওয়াল । কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট এলিমিনেটরে বল করতে আসেন ১১ রান হাতে নিয়ে। কিন্তু প্রথম বলেই ক্রিস গেইলের ৬ ম্যাচের ভাগ্য নিরধারন করে দেয়। বাঁকি কাজ ঠাণ্ডা মাথায় শেষ করেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল।
হয়তো এই দিনটা, ১৮ই অক্টোবর ২০২০ তারিখটা ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে লম্বা সময় ধরে আলোচিত হবে।